Advertisements

ব্যাঙ্ক রেট | ব্যাংক রেট কি

Advertisements

ব্যাঙ্ক রেট | ব্যাংক রেট কি | ব্যাংক রেট কত | ব্যাংক রেট কত ২০২২ | বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংক রেট কত | ব্যাংক রেট ও রেপো রেট

 

আমাদের এই ব্লগে আমরা ইতিমধ্যে অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, যেমন – রেপো রেট, রিভার্স রেপো রেট, সিআরআর, এসএলআর, দেশের জিডিপি কিভাবে নির্ণয় করা হয়, জিএনপি কিভাবে নির্ণয় করা হয়, সুযোগ ব্যয় কী ইত্যাদি নিয়ে। এই পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করবো ব্যাঙ্ক রেট নিয়ে। ব্যাঙ্ক রেট সম্বন্ধে সম্পুর্ণ ধারণা পেতে পোস্টটি শেষ অবধি মন দিয়ে পড়ুন।

Advertisements

Advertisements

ব্যাংক রেট কি

দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে হারে অন্যান্য ব্যাংক গুলিকে ঋণ দেয় তাকেই ব্যাংক রেট বলা হয়। এই ঋণের মেয়াদ মূলত স্বল্প দিনের জন্য হয়। দেশের প্রবৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাংক রেটের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  

Advertisements

ব্যাংক রেটের গুরুত্ব

ব্যাংক রেটকে নিয়ন্ত্রণ করে কোনও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে দেশের অর্থনীতির লাগাম ধরে রাখে। প্রয়োজনমত ব্যাংক রেট বৃদ্ধি বা হ্রাস করে দেশের অর্থনীতির সাপেক্ষে সময়োপযোগী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

ব্যাংক রেট বাড়লে কি হয়?

ব্যাংক রেট বৃদ্ধি করলে দেশের অন্যান্য ব্যাংকগুলিও তাদের সুদের হার বৃদ্ধি করে (কারণ ব্যাংক রেট বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক  থেকে উচ্চ সুদের হারে ঋণ নিতে হয়)। সুদের  হার বৃদ্ধি পেলে, মানুষের মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ঋণ কম নিলে বাজারে টাকার পরিমাণ কমে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান কমে গেলে জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যায়। জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেলে তার দামও কমে যায়। এভাবে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক রেট নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisements

আবার, মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রনেই আছে, অথচ প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে, সেক্ষেত্রে ব্যাংক রেট কমিয়ে দেওয়া হয়।

 

ব্যাংক রেট কমলে কি হয়?

ব্যাংক রেট কমে গেলে ব্যাংকগুলিও তাদের সুদের হার কমিয়ে দেয় (কারণ ব্যাংক রেট হ্রাস পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলিকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিম্ন হারে সুদ দিতে হয়)। সুদের  হার কমে গেলে, মানুষের মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। ঋণ বেশি নিলে বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান বৃদ্ধি পেলে জিনিসপত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। জিনিসপত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে তার উত্‍পাদনও বৃদ্ধি পায়। এভাবে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক রেট নিয়ন্ত্রণ করে দেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisements

ভারতে ব্যাংক রেট

পৃথিবীর বহু দেশের ব্যাংক রেটের ধারণার সাথে ভারতের ব্যাংক রেটের ধারণার বেশ কিছুটা তফাত রয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত নীচে আলোচনা করা হলো।   

ব্যাংক রেট কি

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাত্‍ রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া যে হারে দীর্ঘকালীন ঋণ দেয়, তাই হলো ব্যাংক রেট। সাধারণত কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার, অর্থনৈতিক সংস্থাগুলি, সমবায় ব্যাংক, ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে ঋণ নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের ব্যাংক রেটের ধারণার সাথে ভারতের ব্যাংক রেটের ধারণার তফাত খুব সহজেই অনুমেয়। অন্যান্য দেশে ব্যাঙ্ক রেট -এর হারে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্পকালীন মেয়াদের জন্য ঋণ দেয়, অন্যদিকে  ব্যাঙ্ক রেট -এর হারে  ভারতে দীর্ঘকালীন মেয়াদে ঋণ দেওয়া হয়। রেপো রেট চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারতের মুদ্রা নীতি নির্ধারণে ব্যাংক রেটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো।

Advertisements

ব্যাংক রেট নির্ণয়

বর্তমানে ব্যাংক রেট, রেপো রেটের ওপর নির্ভর করে। পূর্বে ব্যাংক রেট = রেপো রেট + ১% ছিলো। তবে বর্তমানে,

ব্যাংক রেট = রেপো রেট + X%

এক্ষেত্রে X -এর মান বিভিন্ন সময়ে বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। বর্তমানে X = ০.২৫।

অর্থাত্‍ এই সময় ভারতে ব্যাংক রেট = ৪.৯০ (রেপো রেট) + ০.২৫ (X) = ৫.১৫%

 

 

ব্যাংক রেটের ভূমিকা

বর্তমানে ভারতে ব্যাংক রেট মূলত দুটি কাজে ব্যবহৃত হয়।

  • আমরা জানি রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশ মতো প্রত্যেকটি ব্যাংককে সিআরআর বা ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও এবং এসএলআর বা স্ট্যাটুটারি লিকুইডিটি রেশিও অনুযায়ী কিছু টাকা আরবিআই -এর কাছে জমা রাখতে হয় এবং যদি ব্যাংক তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ব্যাংককে জরিমানা দিতে হয়। এই জরিমানার পরিমাণ নির্ণয়ে ব্যাংক রেট ব্যবহৃত হয়। যেমন একদিনের জন্য এই জরিমানা, ব্যাংক রেট + ৩% = (৫.১৫+৩) % = ৮.১৫% হারে ধার্য হয়।
  • Advertisements

 

  • কোনও কোম্পানী থেকে প্রাপ্ত বিল অফ এক্সচেঞ্জ, বাণিজ্যিক বিল, প্রমিসরি নোট ইত্যাদি আরবিআই -এর কাছে জমা করে মুনাফা কামানোর ক্ষেত্রে ব্যাংক রেটের ভূমিকা রয়েছে। ব্যাপারটি একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝা যাক। ধরা যাক, SBI একটি কোম্পানীকে ১০.২০ লক্ষ টাকার বাণিজ্যিক বিলের বদলে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিল। এই বাণিজ্যিক বিলের মেয়াদপূর্তির সময় ৬ মাস। অর্থাত্‍, ৬ মাস পরেই SBI এই টাকা ফেরত পাবে। কিন্তু ৬ মাস অপেক্ষা না করে, SBI ওই বাণিজ্যিক বিল আরবিআই কে দিলো। তবে আরবিআই ওই বাণিজ্যিক বিলটির বদলে SBI কে কত টাকা দেবে তা ধার্য হবে ব্যাংক রেটের দ্বারা। বর্তমানে ৫.১৫% ব্যাংক রেটের হারে, আরবিআই SBI কে (১০ লক্ষ – ৫১,৫০০) ৯,৪৮,৫০০ টাকা দেবে।       
  • Advertisements

 

প্রায়শই জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নগুলি

FAQ – ব্যাংক রেট