Advertisements

রেপো রেট কি | রিভার্স রেপো রেট কি

Advertisements

রেপো রেট কি | রেপো রেট কী | রেপো রেট মানে কী | রেপো রেট কত | বর্তমানে রেপো রেট কত | রিভার্স রেপো রেট | রিভার্স রেপো রেট কি | রেপো রেট বাংলাদেশ

Advertisements

 

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাত্‍ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)ভারতীয় বাজারে মুদ্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে, যেমন সিআরআর, এসএলআর, ইত্যাদি। এছাড়াও রেপো রেট এবং রিভার্স রেপো রেট বৃদ্ধি বা হ্রাস করেও আরবিআই ভারতীয় বাজারে মুদ্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এই পোস্টটিতে রেপো রেট এবং রিভার্স রেপো রেট সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সবকিছু ভালোভাবে বুঝে নিতে পোস্টটি শেষ অবধি পড়ুন।

Advertisements

  

রেপো রেট কি

Advertisements

ব্যাংকগুলি কখনও কখনও কোনও জরুরী প্রয়োজনে স্বল্পকালীন মেয়াদের জন্য আরবিআই -এর থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। এই ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাংক আরবিআই -কে যে হারে সুদ দেয় তাকেই বলা হয় রেপো রেট বা রেট অফ রিপারচেস (Rate of Repurchase)। যদিও পশ্চিমী অর্থনীতিতে একে রেট অফ ডিসকাউন্ট (Rate of Discount) বলা হয়। যদিও ওপরে শুধুমাত্র ব্যাংকগুলির আরবিআই থেকে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তবে, ব্যাংক ছাড়াও, কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার, বিভিন্ন এনবিএফসিও আরবিআই থেকে ঋণ নিতে পারে।    

Advertisements

যদিও রেপো রেট সাধারণ ঋণের মতো কাজ করে না। এই পদ্ধতির দ্বারা ব্যাংকগুলি যে ঋণ নেয় তা মূলত একধরণের অগ্রিম চুক্তি। এক্ষেত্রে যে ব্যাংক আরবিআই থেকে ঋণ নিচ্ছে, তাকে কোনও সরকারী নিরাপত্তা (Government Securities) কে আরবিআই -এর কাছে বন্ধক হিসেবে রাখতে হয় এবং ঋণের সময়সীমা সম্পুর্ণ হওয়ার পর ওই বন্ধক রাখা সরকারী নিরাপত্তা গুলিকে পুনরায় আরবিআই থেকে কিনে নিতে হয়। এই জন্যই রেপো রেট কে রেট অফ রিপারচেস (Rate of Repurchase) বা পুনরায় কিনে নেওয়ার হারও বলা হয়।      

Advertisements

রেপো পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাংকগুলি সাধারণত আরবিআই থেকে এক রাতের জন্যই ঋণ নিতে পারত। যদিও ২০১৩ সাল থেকে  আরবিআই টার্ম রেপো (Term Repo) চালু করে। এর ফলে ব্যাংকগুলি আরবিআই থেকে ৭/১৪/২৮ দিনের জন্যও ঋণ নিতে পারে।

Advertisements

ব্যাংকগুলি আরবিআই থেকে ঋণ নিলে তাদের কি হারে সুদ দিতে হবে তা সময়ে সময়ে আরবিআই নির্ধারণ করে থাকে। যেমন গত ৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ আরবিআই নতুন রেপো রেট ঘোষণা করেছে, যা কিনা ৬.৫০%। এই হিসেবে ধরা যাক কোনও ব্যাংক আরবিআই থেকে ১ দিনের জন্য ৫০০ টাকা ঋণ নিলো। তবে তাকে (৫০০*৬.৫০)/(১০০*৩৬৫) = ০.০৮৯ টাকা সুদ হিসেবে আরবিআইকে দিতে হবে।   

Advertisements

 

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে রেপো রেট

দেশে মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে রেপো রেট বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

 

রেপো রেট বাড়লে কি হয়?

রেপো রেট বৃদ্ধি পেলে ব্যাংকগুলিও তাদের সুদের হার বৃদ্ধি করে (কারণ রেপো রেট বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলিকে আরবিআই কে উচ্চ হারে সুদ দিতে হয়)। সুদের  হার বৃদ্ধি পেলে, মানুষের মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ঋণ কম নিলে বাজারে টাকার পরিমাণ কমে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান কমে গেলে জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যায়। জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেলে তার দামও কমে যায়। এভাবে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক রেপো রেট নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisements

আবার, মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রনেই আছে, অথচ প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে, সেক্ষেত্রে রেপো রেট কমিয়ে দেওয়া হয়।

 

রেপো রেট কমলে কি হয়?

রেপো রেট কমে গেলে ব্যাংকগুলিও তাদের সুদের হার কমিয়ে দেয় (কারণ রেপো রেট হ্রাস পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলিকেও আরবিআই কে নিম্ন হারে সুদ দিতে হয়)। সুদের  হার কমে গেলে, মানুষের মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। ঋণ বেশি নিলে বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান বৃদ্ধি পেলে জিনিসপত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। জিনিসপত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে তার উত্‍পাদনও বৃদ্ধি পায়। এভাবে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক রেপো রেট নিয়ন্ত্রণ করে দেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisements

 

রিভার্স রেপো রেট কি

কখনও কখনও ব্যাংক গুলির নিকট উপস্থিত অতিরিক্ত টাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বল্পকালীন মেয়াদে, আরবিআই ব্যাংকগুলির থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। এই ঋণ নেওয়ার জন্য আরবিআই ব্যাংককে যে হারে সুদ দেয় তাকেই বলা হয় রিভার্স রেপো রেট (Reverse Repo Rate)। যদিও এখানে ব্যাংকগুলির থেকেই আরবিআই -এর ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তবে, ব্যাংক ছাড়াও, কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার, বিভিন্ন এনবিএফসি থেকেও আরবিআই ঋণ নিতে পারে।

Advertisements

রিভার্স রেপো রেটও সাধারণ ঋণের মতো কাজ করে না। এই পদ্ধতির দ্বারা আরবিআই ব্যাংকগুলি থেকে যে ঋণ নেয় তা মূলত একধরণের অগ্রিম চুক্তি। এক্ষেত্রে, যে ব্যাংক থেকে আরবিআই ঋণ নিচ্ছে, তার কাছে কোনও সরকারী নিরাপত্তা (Government Securities) আরবিআইকে বন্ধক হিসেবে রাখতে হয় এবং ঋণের সময়সীমা সম্পুর্ণ হওয়ার পর ব্যাংক ওই বন্ধক রাখা সরকারী নিরাপত্তা গুলি পুনরায় আরবিআই কে বিক্রি করে দিতে বাধ্য থাকে।

Advertisements

রিভার্স রেপো পদ্ধতির মাধ্যমে আরবিআই ব্যাংকগুলি থেকে সাধারণত এক রাতের জন্যই ঋণ নেয়। তবে আরবিআই টার্ম রিভার্স রেপোর (Term Reverse Repo) ব্যাংকগুলি আরবিআই থেকে ৭ দিনের জন্যও ঋণ নিতে পারে।

ব্যাংকগুলি থেকে আরবিআই ঋণ নিলে তাকে কি হারে সুদ দিতে হবে তা সময়ে সময়ে আরবিআই নির্ধারণ করে থাকে। বর্তমানে রিভার্স রেপো রেট ৩.৩৫%।   এই হিসেবে ধরা যাক, আরবিআই কোনও ব্যাংক থেকে ১ দিনের জন্য ৫০০ টাকা ঋণ নিলো। তবে আরবিআইকে (৫০০*৩.৩৫)/(১০০*৩৬৫) = ০.০৪৫৮ টাকা সুদ হিসেবে দিতে হবে।   

Advertisements

 

রিভার্স রেপো রেটের গুরুত্ব

রিভার্স রেপোর সাহায্যে আরবিআই দুটি উদ্দেশ্যে পূর্ণ করে।

  • এর ফলে ব্যাংকের কাছে উপস্থিত অতিরিক্ত টাকা ঋণ হিসেবে নিয়ে ব্যাংকে সুদের লোকসান হওয়া থেকে বাঁচায়।
  • অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে, বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকার যোগান কমাতে ব্যাংকের অতিরিক্ত টাকা ঋণ হিসেবে নিয়ে নেয়। ফলে, ব্যাংক আর ওই অতিরিক্ত টাকা ঋণ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের দিতে পারে না। এভাবে বাজারে অতিরিক্ত টাকারা যোগান কমানোর মধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।   
  • Advertisements

 

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে রিভার্স রেপো রেট

দেশে মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে রিভার্স রেপো রেট বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

 

রিভার্স  রেপো রেট বাড়লে কি হয়?

রিভার্স রেপো রেট বৃদ্ধি পেলে, ব্যাংক গুলি তার অতিরিক্ত টাকা আরবিআই -এর কাছে জমা করতে চায়। ফলে, বিনিয়োগকারীরা সহজে ঋণ নিতে পারেন না। ফলত,  বাজারে টাকার পরিমাণ কমে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান কমে গেলে জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যায়। জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেলে তার দামও কমে যায়। এভাবে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক রিভার্স রেপো রেট নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisements

আবার, মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রনেই আছে, অথচ প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে, সেক্ষেত্রে রিভার্স রেপো রেট কমিয়ে দেওয়া হয়।

 

রিভার্স  রেপো রেট কমলে কি হয়?

রিভার্স রেপো রেট হ্রাস পেলে, ব্যাংক গুলি তার অতিরিক্ত টাকা আরবিআই -এর বদলে উচ্চ হারে বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিতে চায়। ফলে, বিনিয়োগকারীরা সহজে ঋণ নিতে পারেন। ফলত, বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। মানুষের কাছে টাকার যোগান বেড়ে গেলে জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে যায়। জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে গেলে তার উত্‍পাদনও বৃদ্ধি যায়। উত্‍পাদন বৃদ্ধি পেলে দেশের ও তার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হারও বৃদ্ধি পায়।

Advertisements

 

প্রায়শই জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নগুলি

FAQ – রেপো রেট/রিভার্স রেপো রেট