গত বছরের ১লা ডিসেম্বর দাম ছিল ৭.৬০ টাকা। মাত্র এক মাসে তা বৃদ্ধি পেয়ে হলো ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। হ্যাঁ, এমনই অসাধারণ রিটার্ন দিলো উর্জা গ্লোবাল (Urja Global) শেয়ারটি। এক মাসের ব্যবধানেই ৪ গুণেরও বেশী বাড়লো উর্জা গ্লোবালের দাম।
গত ১৪ই জানুয়ারী উর্জা গ্লোবালের সর্বোচ্চ দাম ওঠে প্রতি শেয়ার পিছু ৩৪.৮৮ টাকা। তার পরের দুটি ট্রেডিং সেশনে অর্থাত্ ১৭ই জানুয়ারী এবং ১৮ই জানুয়ারী শেয়ারটির দাম কিছুটা পড়েছে, এবং আজ ১৮ই জানুয়ারী, ২০২২ শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় উর্জা গ্লোবালের একটি শেয়ারের দাম ৩১.৫০ টাকা। এই অবধি পড়ে, নিশ্চই একবার হলেও আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে, উর্জা গ্লোবালে বিনিয়োগ করবেন কিনা। বেশ, তাহলে চলুন, এই কোম্পানীটির সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
UPSTOX -এ ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
উর্জা গ্লোবাল
উর্জা গ্লোবাল কোম্পানীটি পুনঃনবীকরনযোগ্য শক্তি উত্পাদন ও তার ব্যবহার নিয়ে কাজ করে। এই কোম্পানীর মুখ্য কাজ হলো, সৌর বিদ্যুত্ প্রকল্পের পরিকাঠামো তৈরী, তার রূপায়ন, এই বিষয়ে উপদেশ দেওয়া, এবং অফ গ্রিড, ও গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুত্ প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ করা।
কোম্পানীটি সৌর লন্ঠন, রাস্তার জন্য সৌর আলো, ছাদের মাথায় সৌর বিদ্যুত্, সৌর পিভি প্যানেল ইত্যাদি পরিষেবা গুলি দিয়ে থাকে। এছাড়া কোম্পানীটি বিদ্যুত্চালিত রিক্সা এবং বিদ্যুত্চালিত স্কুটারও চালু করেছে। বৈদুতিক স্কুটার E Life এবং E Zees গুলি বুকিংও করা যাচ্ছে মাত্র ৪৯৯ টাকা দিয়ে। এছাড়াও উর্জা গ্লোবাল, সোলার ইনভারটার, সোলার হিটার এবং আরও অন্যান্য পণ্যও উত্পাদন করে।
উর্জা গ্লোবাল ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস
যদি উর্জা গ্লোবালের ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস করা যায়, তাহলে দেখা যাচ্ছে, কোম্পানীটির ওপর কোনও ঋণ নেই বললেই চলে। কোনও কোম্পানীর ওপর ঋণ না থাকা অবশ্যই সেই কোম্পানীর এবং তার শেয়ার হোল্ডারদের পক্ষে খুব ভাল সংকেত বলা যায়। আবার, এই কোম্পানীর বিক্রি (সেলস), গত তিন বছরে, ৩.৬৭% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। উর্জা গ্লোবালের অপারেটিং প্রফিটও গত তিনটি ত্রৈমাসিক (quarter) -এ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও গত তিনটি ত্রৈমাসিকে নেট প্রফিট গত মার্চ ত্রৈমাসিক (quarter) -এর থেকে অনেকটাই কম। কোম্পানীর আর.ও.ই (ROE) বা রিটার্ন অন ইকুইটি ও খুবই করুণ, মাত্র ১.১০%। এর আর.ও.সি.ই. (ROCE) বা রিটার্ন অন ক্যাপিটাল এম্প্লয়েড এবং ই.পি.এস.(EPS) বা আর্নিং পার শেয়ার ও তথৈবচ।
উর্জা গ্লোবালে কি বিনিয়োগ করা ঠিক হবে
উর্জা গ্লোবালের ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস, এই সময় কোন ভাবেই এই কোম্পানীতে বিনিয়োগের কথা বলে না। তবে, ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস অনেক সময়তেই ভুলও প্রমানিত হয়। এমন উদাহরণও বহু রয়েছে।
পুন:নবীকরনযোগ্য শক্তি, অর্থাত্ যে ক্ষেত্রে উর্জা গ্লোবালের করবার, সেখানে আগামী দিনে আরও চাহিদা বৃদ্ধি পেতে চলেছে, একথা বোঝার জন্য কোনও ফাইনান্স বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ভারত সরকারের পুন:নবীকরনযোগ্য শক্তি নিয়ে উৎসাহ, দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ীর চাহিদা বৃদ্ধি, ইত্যাদি বিষয়গুলিই এর সাক্ষ্য দেয়। তাই সবদিক ঠিকঠাক থাকলে উর্জা গ্লোবালেরও ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি পাবে, এমন অনুমান করাই যায়। তবে, তখন এই কোম্পানীটি কেমন পারফর্ম করে তা সময়ই বলবে, কারণ মার্কেট লিডার হয়ে উঠতে গেলে উর্জা গ্লোবালকে পাল্লা দিতে হবে টাটা পাওয়ার, আদানী গ্রিন -এর মতো বড় বড় কোম্পানী গুলিকে যাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন উর্জা গ্লোবালের থেকে বহু গুণে বেশী।
ZERODHA -তে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
শেষ কথা
যে কোনও কোম্পানীতে বিনিয়োগ করার সময় তার ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিসের উপর নির্ভর করেই বিনিয়োগ করা উচিত। তাতে অন্তত ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া যায়। তাই এই মূহুর্তে উর্জা গ্লোবালে বিনিয়োগ করা খুব একটা নিরাপদ পদক্ষেপ হবে না।
আশা করি লেখাটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই বিষয়ে আপনার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানান বা আমাদের মেইল করুন [email protected] -এ। এছাড়া এই লেখাটি অন্য দের সাথে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন। এই ব্লগে আমরা ফাইন্যান্স বিষয়ক বিভিন্ন লেখা প্রকাশ করি। যাতে আমাদের একটি লেখাও আপনার নজর না এড়ায়, তার জন্য ডান দিকের ঘণ্টা আইকনটিতে ক্লিক করে নোটিফিকেশন চালু করে রাখুন। আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সতর্কীকরণ: – শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ । তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে সবদিক ভালো করে যাচাই করে নেবেন। এই পোস্ট পড়ে কেউ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ক্ষতির সম্মুখীন হলে, এই পোস্টের লেখক বা এই ব্লগের সাথে যুক্ত কেউ কোনোভাবেই দায়ী হবেন না।
আরও পড়ুন: –